ধ্যান কী, সে সম্পর্কে পূর্বে বলেছি। এবার বলি, ধ্যান কেন করবো~
নিয়মিত ধ্যান অভ্যাস করার ফলে, ধ্যানী বা ধ্যান-যোগী যে সমস্ত ক্ষেত্রে লাভবান হয়ে থাকেন, সেগুলি একে একে বর্ণনা করলেই বোঝা যাবে, তার মধ্য থেকে কার কোন বিষয়টির চাহিদা রয়েছে। নিয়মিত ধ্যান অভ্যাসের ফলে ঘটে~
৹ মানসিক শান্তি লাভ অর্থাৎ মানসিক অশান্তি থেকে মুক্তি। ৹ মানসিক শৃঙ্খলা লাভ অর্থাৎ মনের বিশৃঙ্খলা থেকে মুক্তি। ৹ একাগ্রতা--- মনোযোগ, আগ্রহ বৃদ্ধি। ৹ প্রধান মানসিক ক্ষমতা--- সঠিক ভাবে গ্রহন ক্ষমতা, ধারণ ক্ষমতা, ও বিতরণ বা ডেলিভারি ক্ষমতা বৃদ্ধি। ৹ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, স্ট্রেস ও টেনশন থেকে মুক্তি। ৹ অস্থিরতা, উত্তেজনা, ভয় থেকে মুক্তি। ৹ মানসিক দূষণ থেকে মুক্তি। ৹ প্রশান্ত ও প্রফুল্লতা বৃদ্ধি। ৹ মনের উপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি। ৹ মনের মেঘাচ্ছন্নভাব থেকে মুক্তি অর্থাৎ পরিচ্ছন্ন মন। ৹ চিন্তাশক্তি~ কল্পনাশক্তি, উদ্ভাবন ক্ষমতা বৃদ্ধি। ৹ নতুন বিষয়ের ধারণা~ নতুন আইডিয়া লাভ। ৹ মানসিক উৎকর্ষতা বৃদ্ধি। ৹ মানসিক এনার্জি বৃদ্ধি, যার ফলে মুড ভালো থাকা। ৹ ইরিটেবিলিটি, অসহিষ্ণুতা থেকে মুক্তি। ৹ হতাশা--- অবসাদ থেকে মুক্তি। ৹ কর্মকুশলতা বৃদ্ধি। ৹ সঠিকভাবে কর্ম সম্পাদনা করার ক্ষমতা লাভ। ৹ শারীরিক ক্ষেত্রে: আজকের দিনের অধিকাংশ রোগ-ব্যাধি, যাকে এক কথায় বলা হয়~ 'সাইকোসোমাটিক ডিজিজ', এগুলো থেকে আস্তে আস্তে মুক্তিলাভ। যেমন উচ্চরক্তচাপ, টেনশন রিলেটেড যন্ত্রণা, এসিডিটি, মাথার যন্ত্রনা, অক্ষুধা, ক্লান্তি, আচরণগত সমস্যা, এবং ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা প্রভৃতি বহু সমস্যা থেকে মুক্তি।
অন্যান্য প্রকারের ধ্যান পদ্ধতি থেকে 'মহামনন' আত্ম-ধ্যানের উপকারিতা অনেক বেশি। আত্ম-ধ্যানের মাধ্যমে আত্ম সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আত্মোপলব্ধি হওয়ায়, ধ্যান যোগীর আচরণে অনেক শুভ পরিবর্তন ঘটে থাকে।
আমি কখনোই বলিনা, ধ্যান ও যোগের মাধ্যমেই সমস্ত শারীরিক ও মানসিক সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়া যাবে। শরীরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে (অর্জিত ও বংশগত) রোগ, রোগবিষ বা টক্সিন থাকলে, ধ্যান-যোগের পাশাপাশি সঠিক প্রাকৃতিক চিকিৎসা এবং 'ডিটক্সিফিকেশন' পদ্ধতির সাহায্যও নিতে হবে আমাদের।